ভালোবাসার বাঁশমহল : স্ত্রীর মৃত‍্যুর পর স্ত্রীকে ভালোবেসে বাঁশ বাগানে বাস

28th August 2020 3:55 pm বর্ধমান
ভালোবাসার বাঁশমহল : স্ত্রীর মৃত‍্যুর পর স্ত্রীকে ভালোবেসে বাঁশ বাগানে বাস


নিজস্ব সংবাদদাতা ( বর্ধমান ) : মমতাজের স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার জন‍্য তার সমাধির উপরেই তাজমহল তৈরী করেছিলেন সম্রাট শাহজাহান । ভালোবাসার রাজপ্রাসাদ ঘিরে প্রেমের আবেশ আজ ও বিরাজ করে । সেই প্রেমের আবেশেই স্ত্রীকে ভালোবেসে স্ত্রী 'র অকালমৃত‍্যুর পর বাঁশমহল তৈরী করেছেন বর্ধমানের পালিতপুরের বাসিন্দা লোকু রায় । বছর ৫২ র এই ব‍্যক্তি বাঁশ বাগানেই তৈরী করেছেন ছোট্ট কুঠির । বাঁশ ঝাড়ের মধ‍্যে সেই কুঠিরেই বসবাস বিগত প্রায় ২০ বছর ধরে । আদি বাড়ি দুমকায় । একসময় সপরিবারে কাজের জন‍্য চলে এসেছিলেন সপরিবারে । স্ত্রী লক্ষী রায়কে নিয়ে পরিবারের সকলের সাথে ছিল বসবাস । দুই মেয়ে এক পুত্র রয়েছে বর্তমানে । স্ত্রী লক্ষী দেবীকে খুব ভালোবাসতেন লোকু রায় । ভালোবেসে আর্থিক অভাব অনটন নিয়েই কোনরকমে চালিয়ে দিতেন দিন । তার মধ‍্যেই হঠাৎ করে স্ত্রী মারা যাওয়ার পর মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন তিনি । ঘন্টার পর ঘন্টা বসে কাটাতেন বাঁশ বাগানে । কারো সাথেই সেভাবে আর কথা বলতেন না লোকু রায় । তারপর নিজের উদ‍্যোগেই বস্তা , পলিথিন সহ একাধিক সামগ্ৰী দিয়ে বাঁশ ঝাড়ের উপরে তৈরী করছেল ছোট্ট কুঠির । নানা রকম জীব জন্তুর উপস্থিতি । রয়েছে নানা ধরনের সাপ । তাদের নিয়েই স্ত্রীকে ভালোবেসে নিজের তৈরী করা বাঁশমহলে বসবাস । দেখতে দেখতে প্রায় ২০ বছরের বেশী সময় অতিক্রান্ত । সেই একইভাবে আজ ও বাঁশমহলে বসবাস লোকু রায় এর । ইতিমধ‍্যেই বর্ষা শুরু হয়েছে । পরিবারের অনান‍্যরা বহুবার ঘরে এসে বসবাসের কথা জানিয়েছেন কিন্তু কথা শোনেননি তিনি । স্ত্রীর স্মৃতি বুকে নিয়েই বাঁশবাগানেই প্রকৃতির মাঝে স্বচ্ছন্দ তিনি । এটাই তার ভালোবাসার রাজপ্রাসাদ ।

 

ছবি: পাপাই সরকার





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।